ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচন: দানের টাকায় ১৫ নারী প্রার্থীর নির্বাচন

zelz-elekকক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত চারটি মহিলা ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন ১৬ জন নারী প্রার্থী। এর মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ডের জাহানারা পারভীন ছাড়া বাকি ১৫ জনই নির্বাচন করছেন দানের টাকায়। তাঁরা টাকা নিয়েছেন বাবা, স্বামী, ভাইবোন ও নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে। নির্বাচনে এক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করা যাবে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা ঘেঁটে এ তথ্য জানা গেছে। তবে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা নেই। পেশায় বেশির ভাগ গৃহিণী। সবার স্বর্ণ ও বার্ষিক আয় রয়েছে। এ ছাড়া নিজের নামে ব্যাংকে জমা ও নগদ টাকাও রয়েছে।
এদিকে জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় আশরাফ জাহান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হন। ২৮ ডিসেম্বর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন প্রার্থী—প্রীতি কণা শর্মা, মশরফা জান্নাত ও শিরীন ফারজানা। মহেশখালীর দক্ষিণ হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা প্রীতি কণা শর্মার শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেণি। নির্বাচনে ১ লাখ টাকা খরচ করবেন নিজের আয় ও স্বামীর দানের টাকা থেকে। মাতারবাড়ীর বাসিন্দা মশরফা জান্নাতের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ বিএড ও এলএলবি। নির্বাচনী খরচ জোগাতে তিনি ভগ্নিপতি আইনজীবী মোস্তাক আহমদের কাছ থেকে ৪০ হাজার ও মাতারবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রেজা খানের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। মহেশখালীর ফকিরাঘোনার বাসিন্দা শিরীন ফারজানা বাবা আবদুল মাজেদ ও ভাই জাহেদ আলমের কাছ থেকে নিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা করে। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি।
২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাহানারা পারভীন, মোছাম্মৎ উম্মে কুলসুম, সৈয়দা নিঘাত আমিন ও আসমা উল হোসনা। চকরিয়া ঢেমুশিয়ার বাসিন্দা জাহানারা পারভীনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। তিনি কৃষি ও চিংড়ি খাতের আয়ের টাকা নির্বাচনে খরচ করবেন। পেকুয়ার বারবাকিয়ার বাসিন্দা সৈয়দা নিঘাত আমিনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি (প্রথম পর্ব)। তাঁকে নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য স্বামী ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচী দিয়েছেন ৮০ হাজার টাকা। পেকুয়ার রাজাখালীর মোছাম্মৎ উম্মে কুলসুমের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসএস। নির্বাচনী খরচের জন্য স্বামী মো. গিয়াস উদ্দিন দিয়েছেন ২৫ হাজার টাকা। কোনাখালীর আসমা উল হোসনার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (অনার্স)। স্বামী মিজানুর রহমান ও প্রবাসী ভাই আজিজুর রহমানের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন নির্বাচনের জন্য।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন শাহানা বেগম, লুৎফুন্নাহার, রেহেনা খানম, ফিরোজা বেগম ও আনোয়ারা বেগম। চকরিয়ার কাকারার বাসিন্দা শাহানা বেগম স্বশিক্ষিত। নির্বাচনী খরচের ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন দুই ভাই আজমগীর আলম ও জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে। ঈদগাঁও এলাকার লুৎফুন্নেহারের শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি। নির্বাচনের জন্য ছেলে মাহবুবুর রহমান দিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। চকরিয়ার চিরিঙ্গার রেহেনা খানমের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। নির্বাচনের জন্য স্বামী আবু তাহের দিয়েছেন ১ লাখ টাকা। একই এলাকার ফিরোজা বেগমের শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক। নির্বাচনের জন্য ভাই আবু তাহের দিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। কক্সবাজারের ইসলামাবাদের আনোয়ারা বেগমের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত। নির্বাচনী খরচের ১ লাখ টাকা দিয়েছেন প্রবাসী ভাই মো. আলম।
৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী তাহমিনা চৌধুরী, রোমেনা আক্তার, শাহেনা আক্তার ও হামিদা তাহের। শহরের উত্তরা লেন এলাকার হামিদা তাহেরের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। নির্বাচনের জন্য শিক্ষক বোন রাশেদা আক্তার দিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। মধ্যম নুনিয়াছটার শাহেনা আক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। নির্বাচনের জন্য বাবা আবদুল গণি দিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। দক্ষিণ তারাবনিয়ারছড়ার রোমেনা আক্তারের পেশা শিক্ষকতা। তিনি কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রভাষক। শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর। নির্বাচনী খরচের জন্য স্বামী আবু তাহের দিয়েছেন ৩০ হাজার, বাবা রশিদ আহমদ দিয়েছেন ৩০ হাজার ও সিটি কলেজের শিক্ষক আ স ম ওসমান গণি চৌধুরী দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা। কক্সবাজার পৌরসভার বাসিন্দা তাহমিনা চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। নির্বাচনের জন্য ১ লাখ টাকা পেয়েছেন ভাই মাসেদুল হকের কাছ থেকে।

পাঠকের মতামত: